নিরবিচ্ছিন্ন ও উন্নত সার্ভিস পেতে কোন রাউটার গুলো ব্যবহার করবেন?
সম্মানিত গ্রাহক, উন্নত সেবা পেতে ভাল মানের রাউটার অবশ্যই আবশ্যক। আমরা সাধারণত আপনাকে আপনার বাসার রাউটার পর্যন্ত কানেক্টিভিটি এক্টিভ করে দিচ্ছি।
কিন্তু আপনার নিজস্ব ডিভাইজগুলোকে ইন্টারনেট প্রোভাইড করছে আপনার রাউটারটি। অতএব আমাদের জানা জরুরী কোন রাউটার গুলো ব্যবহার করলে আমরা সিগন্যাল কমে যাওয়া, গেটওয়ে তে পিং বেড়ে যাওয়া, এক রুম থেকে অন্যরুমে গেলে ইন্টারনেট স্লো কিংবা ডিস্কানেক্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা গুলো আমাদের কে ফেস করতে হবে না ।
- দ্রুত ও নিখুঁত ইন্টারনেট পরিষেবা পেতে ওয়াইফাই কানেকশন জরুরী। কিন্তু অনেক সময়েই গতি হারিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে এই বেতার সংযোগ। কী কারণে স্লো হয় ওয়াইফাই সংযোগ? সমস্যার সমাধান কী?.
- তা নিয়ে আজকের ব্লগটিতে আলোচনা করবো।
- ডেটা ট্রান্সফার করতে ২টি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির সাহায্য নেয় ওয়াইফাই। এগুলি হল ২.৪ গিগাহাট্জ এবং ৫ গিগাহাট্জ। বেশির ভাগ আধুনিক রাউটার এই দুই ফ্রিকোয়েন্সির মধ্যে ঘোরাফেরায় স্বচ্ছন্দ। এই দুই ফ্রিকোয়েন্সির মধ্যে রয়েছে একাধিক চ্যানেল- ২.৪ গিগাহাট্জে ১৪টি এবং ৫ গিগাহাট্জে ৩০টি। ওয়াইফাই হঠাৎ ধীরে চলার পিছনে নানান কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে কিছু কারণ নিম্নে আলোচনা করা হল।
- ১) রাউটার প্লাগ ইন করার সময় জায়গা নির্বাচন নিয়ে বেশির ভাগ মানুষই ভাবেন না। অনেক সময় মেঝের ওপর বা কোনও কিছুর আড়ালে প্লাগ থাকার দরুণ সেখানেই রাউটারের ঠাঁই হয়। মনে রাখতে হবে, রাউটার যত উঁচুতে রাখা যায় তত রেডিও ওয়েভ সম্প্রচারের পরিধি ছড়িয়ে পড়ে এবং দ্রুততম ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে, উঁচু অবস্থানের জন্য অবাঞ্চিত কোনও বাধাও এড়ানো যায়।
- ২) কংক্রিট ও ধাতু আংশিক ভাবে ওয়াইফাই তরঙ্গ রোধ করে। তবে এই দুই পদার্থ ছাড়াও কোনও বৈদ্যুতিন যন্ত্র রেডিও তরঙ্গ রুখে দিতে বা শ্লথ করে দিতে পারে। রাউটার বসানোর সময় তাই দেখে নিতে হবে, তরঙ্গ সম্প্রচারের পথে কোনও আড়াল যেন না থাকে। পাশাপাশি, বাড়ির বেসমেন্টে কখনও রাউটার রাখা চলবে না কারণ এই এলাকাটি কংক্রিটে আবদ্ধ থাকে যা ভেদ করতে ব্যর্থ হয় ওয়াইফাই সিগন্যাল।
- ৩) মনে রাখা দরকার, রাউটার থেকে যত দূরে যাওয়া যাবে, ওয়াইফাই সিগন্যাল ততই দুর্বল হবে। এই কারণে ডিভাইসের কাছাকাছি রাউটার থাকা দরকার। রাউটার থেকে ওয়াইফাই সিগন্যাল ৩৬০ ডিগ্রি পরিধিতে ছড়িয়ে পড়ে। তাই বাড়ির মধ্যস্থলে রাউটার বসাতে হবে। তবে বাড়ি যদি বিশাল হয় এবং ওয়াইফাই স্পিড কম হয় তাহলে ওয়াইফাই এক্সটেন্ডার বা রিপিটার ব্যবহার করতে হবে।
- ৪) মাইক্রোওয়েভ ওভেনও ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে বাধা সৃষ্টি করে। বিশেষ করে পুরনো রাউটারের ক্ষেত্রে এই সমস্যা ঘটে। মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ফ্রিকোয়েন্সি ওয়াইফাই ফ্রিকোয়েন্সিকে অনেক সময় ওভারল্যাপ করে বলেই সমস্যা হয়। তাই মাইক্রোওয়েভের থেকে রাউটার দূরে রাখা দরকার।
- ৫) আজকাল ঘরে ঘরে রাউটার ব্যবহার করা হয়। এর ফলে চ্যানেল ওভারল্যাপের সমস্যা দেখা দেয়। শহরের বিভিন্ন হাউজিং কমপ্লেক্সে বসবাসকারীদের এই কারণে প্রায়ই মন্থর গতির ওয়াইফাই নিয়ে বিব্রত হতে হয়। এই সমস্যা এড়াতে রাউটার সেটিংয়ের সময় সঠিক চ্যানেল বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। এছাড়া সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকলে যে কোনও মুহূর্তে ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে ঢুকে পড়তে পারে অবাঞ্ছিত ইউজার। জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার এবং নিয়মিত নজরদারিও চালিয়ে যেতে হবে।
- ৬) পিসি-তে বিশাল মাপের ডাউনলোড করার সময় গতি হারায় ওয়াইফাই। এই কারণে ভেবেচিন্তে ওয়াইফাইয়ের সাহায্যে ডাউনলোড করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, আপনার ওয়াইফাইয়ের অংশীদাররা গেমিং বা নেটফ্লিক্সের মতো ভারী ব্যান্ডউইডথের ফাইল স্ট্রিমিং করছেন কি না। তেমন হলে নিজের নেটওয়ার্ক ট্র্যাফিক গুরুত্ব অনুসারে সাজিয়ে নিতে হবে।
- ৭)ইন্টারনেট সরবরাহ এবং রাউটার এর কাজে নিয়োজিত আপনার ডিভাইসের সফটওয়্যার গুলোকে নিয়মিত আপডেট হয়। এক্ষেত্রে আপনার ডিভাইসে ইন্সটল করা সেই সম্পর্কিত কোন সফটওয়্যার থাকলে তবে সেটি অবশ্যই আপডেট করে নেওয়া উচিত। আপনি যদি একটু খেয়াল করেন আপনার রাউটার ও মোবাইল ডিভাইস বা পিসির সফটওয়্যার গুলো আপডেট করে নিলে ইন্টারনেট স্পীড অনেক ভালো পাওয়া যায়। তাই ইন্টারনেট স্পিড বেশি পাওয়ার জন্য আপনার ডিভাইসের সফটওয়্যার গুলোকে আপডেট থাকা প্রয়োজন।
- এ ছাড়াও পিসি এবং টিভিগুলোতে রাউটার থেকে সরাসরি ক্যাবলের মাধ্যমে কানেক্ট করে নিলে আপনি এই ডিভাইজ গুলোতে সার্ভিস ভাল পাবেন।
- সুতরাং ডুয়াল ব্যান্ড এর রাউটার কিনুন। নিয়মিত রাউটারের ফার্মওয়্যার আপগ্রেড করুন । যে কোন প্রয়োজনে আমাদের টেকনিক্যাল টিমের সহায়তা নিন।